ইউরোপে রপ্তানি পণ্য নিতে জাহাজ এখন চট্টগ্রাম বন্দরে

সূত্রঃ প্রথম আলো

এখন চট্টগ্রাম ডেস্ক।

আপডেটের সময়ঃ ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২২

সরাসরি ইউরোপের দেশ ইতালিতে রপ্তানি পণ্য নেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে ভেড়ানো হয়েছে এমভি সোঙ্গা চিতা নামের ছোট আকারের জাহাজটি। আজ শনিবার দুপুরে বন্দর জলসীমা থেকে সরাসরি জেটিতে ভেড়ানো হয় জাহাজটি। আগামী সোমবার জাহাজটি রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনার নিয়ে ইতালির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা।

ইতালির দুটি বন্দর থেকে কয়েকটি আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার ও খালি কনটেইনার নিয়ে এসেছে জাহাজটি। ফিরতি পথে জাহাজটি ৯৮৩ একক রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনার নিয়ে যাবে। এর মাধ্যমে সরাসরি ইউরোপে কনটেইনারবাহী জাহাজ চলাচলে নতুন ইতিহাস তৈরি হবে।

বন্দর সচিব ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, জাহাজটি বন্দর জলসীমায় আসার কিছুক্ষণ পরই বেলা ১টা ১৫ মিনিটে নিউমুরিং টার্মিনাল জেটিতে ভেড়ানো হয়। এরপরই জাহাজ থেকে আমদানি পণ্যভর্তি ও খালি কনটেইনার নামানো শুরু হয়।

এত দিন চট্টগ্রাম থেকে সিঙ্গাপুর বা শ্রীলঙ্কার বন্দর ঘুরে ইতালি বা ইউরোপের দেশে যেতে হতো। এতে স্বাভাবিকভাবে সময় লাগত ২৪-২৮ দিন। এখন সিঙ্গাপুর বা শ্রীলঙ্কায় বড় জাহাজে বুকিং পেতে দেরি হওয়ায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই সময় ৩০-৩৫ দিনের বেশি লাগছে। এখন সরাসরি জাহাজ সেবা চালু হওয়ায় নতুন বিকল্প পথ তৈরি হয়েছে।

এমভি সোঙ্গা চিতা জাহাজটি ৯৪৫ একক খালি কনটেইনার এবং আমদানি পণ্যবোঝাই সাতটি কনটেইনার নিয়ে গত ১৭ জানুয়ারি ভোরবেলায় রওনা হয় ইতালির বন্দর থেকে। এ হিসেবে জাহাজটি চট্টগ্রামে আসতে সময় লেগেছে ১৯ দিন। জেটিতে ভেড়ানোর পর কনটেইনার নামানো শেষ হলে কাল থেকে রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনার বোঝাই শুরু হবে।

জানতে চাইলে নতুন এই সেবার বাংলাদেশের স্থানীয় প্রতিনিধি রিলায়েন্স শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিকস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাশেদ প্রথম আলোকে বলেন, নতুন সেবায় যাতে দেশের রপ্তানি খাতে সর্বোচ্চ সুফল পাওয়া যায়, সে জন্য বন্দর চেয়ারম্যান সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। জাহাজ বহির্নোঙরে অপেক্ষা ছাড়াই জেটিতে ভেড়ানো হয়েছে। এতে নতুন সেবা চালুর উদ্যোক্তারা উৎসাহিত হয়েছেন।

করোনার প্রভাবে গত বছর থেকে বিশ্বজুড়ে কনটেইনার পরিবহনের ভাড়া বাড়তে থাকে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ভাড়া পাঁচ থেকে দশ গুণ বেড়ে যায়। আবার সংকটের কারণে জাহাজে কনটেইনার পরিবহনের নিশ্চয়তাও পাওয়া যাচ্ছিল না। এটি বড় উদ্বেগ তৈরি করে বিদেশি ক্রেতাদের। কারণ, বিদেশি ক্রেতাদের প্রতিনিধি ফ্রেইট ফরোয়ার্ডাররা বাংলাদেশে বেসরকারি ডিপোগুলোতে পণ্য বুঝে নেন। এরপর বিদেশি ক্রেতাদের খরচেই নেওয়া হয় নিজ দেশে। চট্টগ্রামে পণ্য বুঝে নিলেও তা পরিবহনে যেমন খরচ বেশি হচ্ছিল, আবার সময়মতো পণ্যও হাতে পাচ্ছিল না তারা

এমন পরিস্থিতিতে ইতালির ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার প্রতিষ্ঠান আরআইএফ লাইন ও এটির সহযোগী প্রতিষ্ঠান ক্যালিপসো কোম্পানিয়া ডি নেভিগেশন নতুন এই সেবা চালু করেছে। মূলত ইতালির ক্রেতাদের সহযোগিতায় ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার প্রতিষ্ঠানটি এই সেবা চালু করেছে।