আপডেটের সময়ঃ মার্চ ২১, ২০২৩
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সেন্ট স্কলাস্টিকাস্ গার্লস্ হাই স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও হস্তশিল্প মেলা ২০২৩ উদ্বোধন করে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক মো. জাহেদুল হক বলেছেন, আজকের শিক্ষার্থীরাই নতুন নতুন আবিস্কারের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বে।
মঙ্গলবার সকালে স্কুলে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক মো. জাহেদুল হক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রিয় শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন, তোমরা চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পেয়েছো। তোমরা এক বিবর্তনের সাক্ষী। তোমাদের শিক্ষা জীবনের মধ্যেই দেখতে পেয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। কিছুদিনের মধ্যে টানেল দিয়ে কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে অপর পাড়ে চলে যেতে পারবে। আমাদের এখন স্যাটেলাইট আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছেন তোমরাই সে দেশের নাগরিক। পুরো বিশ্বে এখন আলোচনা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে মেশিন টু মেশিন যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এতে উৎপাদনে বিশাল পরিবর্তন আসবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নতুন ধারণার সাথে তোমাদের পরিচিত হতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা খাদ্য উৎপাদন বহুগুণ বাড়িয়েছি। বিজ্ঞানীর লবণাক্ত মাটিতে উৎপাদন সম্ভব এমন জাতের ধানও উদ্ভাবন করেছেন। কৃষি জমিতে এখন সেন্সর ব্যবহার হচ্ছে। তোমরাই ভবিষ্যতে নতুন নতুন আবিস্কারে কৃষি উৎপাদনকে এগিয়ে নেবে। বাংলাদেশের হস্তশিল্প এখন বিদেশে রপ্তানি হয়। তোমরাই ভবিষ্যতের উদ্যক্তা হবে মেধা মননের বিকাশের মধ্য দিয়ে। সে সুযোগ করে দিচ্ছে বিদ্যালয়। এ থেকে শিক্ষা নিয়ে তোমরা এগিয়ে যাবে। আধুনিক উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশের যে স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী দেখছেন তার জন্য তোমাদের শিক্ষার সুযোগ বাড়াতে তিনি দু হাতে দিচ্ছেন তোমাদের স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে। বড় হয়ে এর প্রতিদান তোমাদের দেশকে দিতে হবে। জনগণের রাজস্বের টাকায় তোমাদের শিক্ষার ব্যয় নির্বাহ হচ্ছে। তাই পড়া শেষে দেশ সেবা করে সেই ঋণ শোধ করতে হবে। তোমাদের সামনে অবারিত সুযোগ। নিজেদের স্বপ্ন নিজেরে নির্মাণ করবে। সেই স্বপ্নের লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে যাবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সেন্ট স্কলাস্টিকাস্ গার্লস্ হাই স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ফাদার লেনার্ড সি. রিবেরু বলেন, ক্ষুদ্র প্রয়াসের মধ্যে দিয়ে আমরা বড় কিছুর দিকে ধাবিত হই। বিজ্ঞান উদ্ভাবনী শক্তি। আমরা উন্নতি চাই, মঙ্গল ও কল্যাণ চাই। ধ্বংস নয়। আজকের ছোট ছোট আবিস্কারের মধ্যে মিশে আছে মেধা শ্রম চিন্তা। তোমাদের মধ্য থেকেই ভবিষ্যত পাবে নতুন বিজ্ঞানী। শিক্ষা আমাদের বিবেকবান করে তোলে। স্কুল থেকেই সবকিছুর শুরু। মানবের সেবায় সকল অর্জনকে বিলিয়ে দিতে হবে ভবিষ্যতে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সেন্ট প্লাসিডস্ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ব্রাদার স্যামুয়েল সবুজ বালা বলেন, যে কোনো সহশিক্ষা কার্যক্রম খুব আনন্দের। এর মধ্য দিয়ে টিম ওয়ার্কের চর্চা হয়। বিজ্ঞান প্রজেক্টগুলোর মধ্য দিয়ে মেধা বিকশিত হবে এবং উৎকর্ষ লাভ করবে, যা ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের শক্তি যোগাবে।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে সেন্ট স্কলাস্টিকাস্ গার্লস হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ শিল্পী সেলিনা কস্তা বলেন, আধুনিক যুগের বিস্ময় বিজ্ঞান। বিজ্ঞান সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রাত্যহিক জীবনকে সহজ করতে বিজ্ঞান মেলার আয়োজন। এ মেলার গুরুত্ব প্রাত্যহিক জীবনে অনেক। বিজ্ঞান আমাদের জীবনকে করেছে সহজ। ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমুখী করে নব নব আবিস্কারে উদ্বুদ্ধ করতে বিজ্ঞান মেলার আয়োজন। সবাইকে হতে হবে বিজ্ঞানমনস্ক। ব্যক্তি জীবনের পাশাপাশি সমাজ ও দেশের কল্যাণে শিক্ষার্থীদের এ জ্ঞান ভূমিকা রাখবে।
‘বিহুরে লগন, মধুর এ লগন, আকাশে বাতাসে’ গানের সাথে শিক্ষার্থীর নৃত্য পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান।
স্কুলের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মাগ্রেট মণিকা জিন্স ও শিক্ষক শামাপদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সেন্ট স্কলাস্টিকাস্ গার্ল্ হাই স্কুল এন্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ সিস্টার অসীমা স্কলাস্টিকা রিবেরু, গভর্নিং বডির শিক্ষক প্রতিনিধি সাথী গোমেজ, গভর্নিং বডির শিক্ষক প্রতিনিধি কামনাশীল ভট্টচার্য এবং অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক শিক্ষক রাজীব চক্রবর্তী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষার্থীদের তৈরি করা বিজ্ঞান প্রকল্পগুলো ঘুরে দেখেন অতিথিরা। প্রজেক্টগুলোর মধ্যে ‘হোম অব দ্যা নেক্সট সেঞ্চুরি’, ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং এন্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ’, ‘ডিসাইরেবল সিটি’, ‘ইলেকট্রোস্টেটিক প্রেসিপিটেটর’ সহ প্রায় একশ প্রকল্প প্রদর্শিত হয়।# প্রেস বিজ্ঞপ্তি