প্রতিনিধি নাট্য সম্প্রদায়ের সপ্তাহব্যাপী উৎসব সমাপ্ত


এখন চট্টগ্রাম ডেস্ক।

আপডেটের সময়ঃ ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩

‘দ্রোহে প্রেমে সংগ্রামে, এসো নাটকের প্রাঙ্গণে’ স্লোগানে ২৭ জানুয়ারি শুরু হওয়া প্রতিনিধি নাট্য সম্প্রদায়ের সপ্তাহ ব্যাপী নাট্যোৎসবের গতকাল ছিল সপ্তম ও সমাপনী দিন। উৎসব উপলক্ষ্যে গ্রুপ থিয়েটার ভুক্ত বিভিন্ন দলের অংশগ্রহণে শিল্পকলায় বসেছিল নাট্যকর্মীদের মিলন মেলা।

 

সমাপনী পর্ব শুরু হয় বিকেল পাঁচটায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির অনিরুদ্ধ মুক্তমঞ্চে। প্রতিনিধির প্রতিষ্ঠার ৪৩ বছরের এ উৎসবের সমাপনী পর্বের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। সম্মানিত অতিথি ছিলেন নাট্যকার, নাট্যনির্দেশক, অভিনেতা রবিউল আলম, নাট্যকার, নাট্যনির্দেশক, অভিনেতা ম. সাইফুল আলম চৌধুরী এবং নাট্যকার, নাট্যনির্দেশক, অভিনেতা সনজীব বড়ুয়া।

 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাট্যোৎসব উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক হাসান জাহাঙ্গীর। প্রধান অতিথি লিয়াকত আলী লাকী বলেন, “স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের নাটককে এগিয়ে নিতে প্রতিনিধি নাট্য সম্প্রদায় উলে¬খযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। এই দলের দলপ্রধান ও অন্যান্য সদস্যরা নাটককে সমৃদ্ধ করেছে।”

 

নাট্যজন রবিউল আলম বলেন, “প্রতিনিধি বেশকিছু মৌলিক নাটক রচনা করেছে। প্রতিনিধির নাট্যকার প্রদীপ দেওয়ানজীর লেখা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটকগুলো প্রতিনিধিকে চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেছে।”

 

নাট্যজন ম. সাইফুল আলম চৌধুরী বলেন, “প্রতিনিধির আগামীর পথ চলা আরো সুন্দর ও মঙ্গলময় হোক। ধর্মনিরপেক্ষা, সুস্থ, সুন্দর সমাজের জন্য থিয়েটার চর্চা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

নাট্যজন সনজীব বড়–য়া বলেন, “৪৩ বছরের পথচলা অনেক কঠিন। প্রতিনিধি এই কঠিন পথ পার করেছে।”

 

নাট্যোৎসব উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক হাসান জাহাঙ্গীর সমাপনী বক্তব্যে- অতিথি, দর্শক, শিল্পীসহ সবার প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে সভাপতি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমৃদ্ধ নাট্য কর্মকাণ্ডকে বেগবান করা ও বাঙালি সংস্কৃতিকে সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সুস্থ নাটক মঞ্চায়ন করাই ছিল আমাদের ৪৩ বছরের পথচলার বড় চ্যালেঞ্জ। বিগত সময়ে দেশের মানুষের সামনে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে পেরেছি, সুন্দর ও মানবিকতার কথা বলতে পেরেছি, এসবই আমাদের দলের সাফল্য। সবাইকে সাথে নিয়ে তাইতো আজ আমাদের  ৪৩ বছরের উৎসব।”

 

প্রতিনিধির নাট্যকর্মী দিলরুবা খানমের সঞ্চালনায় অনিরুদ্ধ মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করে ওড়িশী অ্যান্ড টেগোর ডান্স মুভমেন্ট সেন্টার, চট্টগ্রাম এবং সঙ্গীত পরিবেশন করেন শংকর দে, হাসান জাহাঙ্গীর, শান্তা গুহ, আফরোজা জুলি। উৎসব ঘোষণা পাঠ করেন নাট্যকর্মী অঞ্চল চৌধুরী।

 

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে উৎসবের সমাপনী সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় নাটক ‘পুণ্যাহ’। বদরুজ্জামান আলমগীর রচিত নাট্যকেন্দ্র প্রযোজিত নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন ইউসুফ হাসান অর্ক।

 

নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঝুনা চৌধুরী, ইকবাল বাবু, ইউসুফ হাসান অর্ক, শেখ মাহবুবুর রহমান, খন্দকার সাজিয়া আফরিন, সংগীতা চৌধুরী, রামকৃষ্ণ মিত্র, সাইফুল ইসলাম সরকার, হাবিব মাসুদ, নূর এ আলম নয়ন, সংগীতা চৌধুরী, ইবতেসাম মাহমুদ শ্যামা, মনামী ইসলাম, শহিদুল্লাহ সবুজ, কৌশিক বিশ্বাস, সাজিদ উচ্ছ্বাস, তন্ময় আশরাফ, এস আই রাজ, ইফাত আরা, নারিন আফরোজ, ঐন্দ্রিলা মজুমদার, ফারহান রুমি, রাজীব আহমেদ, প্রশান্ত স্বর্ণকার ও নির্ঝর অধিকারী। আলোক পরিকল্পনা অম্লান বিশ্বাস। পোশাক পরিকল্পনা সাজিয়া আফরিন। কোরিওগ্রাফি প্রান্তিক দেব।

 

সবশেষে ছিল রাতের খাবার সহ নাট্যকর্মীদের মিলন মেলা। সেই সাথে আতশবাজি, আনন্দ উল্লাস, আকাশে ফানুস উড়ানোসহ নানান আয়োজন। সাতদিন মুখরিত ছিল শিল্পকলা প্রাঙ্গণ। প্রতিদিন মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠান, মিলনায়তনে নাটক, দর্শকদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি সব মিলিয়ে একটি সফল নাট্যোৎসব।# বিজ্ঞপ্তি