বিশ্ব স্ট্রোক দিবসে এভারকেয়ার হসপিটালে সেমিনার


এখন চট্টগ্রাম ডেস্ক।

আপডেটের সময়ঃ অক্টোবর ২৯, ২০২২

বিশ্ব স্ট্রোক দিবস ২০২২ পালন করেছে বন্দরনগরীর সর্ববৃহৎ হাসপাতাল, এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম। সেই উপলক্ষ্যে, এবছরের প্রতিপাদ্য ‘দ্য পাওয়ার অব সেভিং প্রেশাসটাইম’ বিষয়ে একটি সেমিনার এবং র‍্যালির আয়োজন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

 

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এর মহাব্যবস্থাপক ডা. ফজলে আকবর; এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এর নিউরোলজি বিভাগের সিনিয়র কন্সালটেন্ট ডা. হামিদুল হক; নিউরোলজি বিভাগ-এর কন্সালটেন্ট ডা. মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন; নিউরোসার্জারি বিভাগ-এর সিনিয়র কন্সালটেন্ট ও কো-অর্ডিনেটর ডা. মো: আনিসুল ইসলাম খান; নিউরোলজি বিভাগ-এর সহযোগী কন্সালটেন্ট ডা. এ. এম. সাফায়েত হোসেন প্রমুখ।

 

সেমিনারে এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এর মহাব্যবস্থাপক ডা. ফজলে আকবর বলেন, “স্ট্রোক হলে এক মিনিটে প্রায় ২২ লক্ষ নিউরন মৃত্যবরণ করতে পারে। এজন্য বিশেষজ্ঞরা বলেন স্ট্রোক হলে রোগীদের জন্য প্রতিটি সেকেন্ডই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং, স্ট্রোক হয়েছে বোঝামাত্র সময় নষ্ট না করে তাৎক্ষণিক নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম উন্নত প্রযুক্তি সমৃদ্ধ বন্দরনগরীর সর্ববৃহৎ হাসপাতাল। অন্যান্য সকল রোগের মতো স্ট্রোকের রোগীদের সেরা সেবা নিশ্চিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

 

নিউরোলজি বিভাগের সিনিয়র কন্সালটেন্ট ডা. হামিদুল হক বলেন, “স্ট্রোকের দুটি ধরণ সম্পর্কে আমরা অবগত এবং উভয় ক্ষেত্রেই উপসর্গ প্রায় এক। তাই সঠিক পরীক্ষা ছাড়া রোগের ধরণ নির্ণয় প্রায় অসম্ভব। স্ট্রোকে অনেকের জীবনই সম্পূর্ণ বদলে গেছে। তবে প্রাথমিক গাইডলাইন মোতাবেক চললে জটিল অবস্থা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। সকলের প্রতি আমার আহ্বান, স্ট্রোক হলে অবহেলা না করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।”

 

নিউরোলজি বিভাগ-এর কন্সালটেন্ট ডা. মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, “স্ট্রোকের কারণে রোগী অজ্ঞান হয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর শ্বাসনালি, শ্বাস-প্রশ্বাস ও রক্ত সঞ্চালন সচল রাখার (সিপিআর থেরাপি এক্ষেত্রে বিশেষ কার্যকরী) চেষ্টা করতে হবে। রোগীকে একদিকে কাত করে বালিশ ছাড়া মাথা নিচু করে শোয়াতে হবে। চোখ ও চোখের প্রতিক্রিয়া বা সংকেতের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। মূত্রথলির যত্ন নিতে হবে ও প্রয়োজনে ক্যাথেটার ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ রোগীর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।”

 

নিউরোসার্জারি বিভাগ-এর সিনিয়র কন্সালটেন্ট ও কো-অর্ডিনেটর ডা. মো: আনিসুল ইসলাম খান বলেন, “হেমোরেজিক এবং ইসকিমিক উভয় ধরনের স্ট্রোকে সার্জারির সুযোগ আছে। রোগীর জ্ঞানের মাত্রা কমে গেলে এবং সিটি স্ক্যানের রক্তের পরিমাণ এবং প্রেসার ইফেক্ট পর্যালোচনা করে আমরা সাধারণত সার্জারীর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। সার্জারীর পরবর্তীকালে ফিজিওথেরাপির রোল আছে। অবশ হাত -পা কিছুদিন গেলে শক্ত হয়ে যায় – জোর করে টেনেও সোজা করা যায় না। নিয়ন্ত্রিত ফিজিওথেরাপি এই অবস্থা রোধ করতে সাহায্য করে।”

 

নিউরোলজি বিভাগ-এর সহযোগী কন্সালটেন্ট ডা. এ. এম. সাফায়েত হোসেন বলেন, “স্ট্রোক বিশ্বব্যাপি খুবই কমন একটি সমস্যা বা রোগ। একটি ভুল অনেকেই করেন যে, স্ট্রোক হচ্ছে হৃদযন্ত্রের কোনো সমস্যা। তবে সেটি ভুল। স্ট্রোক মস্তিষ্কের একটি রোগ। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ-রক্তচাপ স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান কারণ। এছাড়া ধূমপান, মাদক, দুশ্চিন্তা, ডায়াবেটিস ইত্যাদি স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই সকলের প্রতি আমার আহ্বান, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ত্যাগ করুন, স্ট্রোকমুক্ত সমাজ গড়ুন।”

 

উক্ত সেমিনারে এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রাম থেকে চিকিৎসাপ্রাপ্ত দুইজন স্ট্রোক রোগী উপস্থিত ছিলেন। তারা তাদের চিকিৎসা সেবার অভিজ্ঞতা জানান এবং এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রামেরর জন্য শুভকামনা জানান।# বিজ্ঞপ্তি