আপডেটের সময়ঃ মে ৫, ২০২৩
বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদার স্মৃতি পরিষদ বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এর ১১৩তম জন্মদিবসে পাহাড়তলী ইউরোপীয়ান ক্লাবের সামনে প্রীতিলতার ভাস্কর্যে পুষ্পিত শ্রদ্ধাজ্ঞলি নিবেদন শেষে এক পথসভা ও গণ সংগীতের আয়োজন করেন।
পথসভায় সভাপতিত্ব করেন,পরিষদের সভাপতি অঞ্জন কান্তি চৌধুরী, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক স্বদেশ চক্রবর্তী , বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাস্টার অজিত কান্তি শীল , মো: জয়নাল আবেদিন শেখ, মো: দিদারুল আলম, মো: সবুর । গণ সংগীত পরিবেশন করেন পরিষদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক টিভি ও বেতার শিল্পৗ কাজল দত্ত, টিভি ও বেতার শিল্পৗ অচিন্ত্য কুমার দাশ। পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সিঞ্চণ ভৌমিক পথসভা ও গণ সংগীত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
পথসভায় বক্তারা বলেন, বীরকন্যা প্রীতিলতা আমাদের জাতীয় জীবনে চেতনার উৎস। আমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে কোন অশুভ শক্তির কবলে পড়লে প্রীতিলতার এই ভাস্কর্যের কাছে শক্তি আহরণ করতে ছুটে আসি। এবং একইভাবে কোন জীবন সংগ্রামে জয়যুক্ত হতে পারলেও শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে আসি। কারণ প্রীতিলতা হচ্ছে আমাদের সংগ্রাম ও শক্তির উৎস। এই পাহাড়তলী ইউরোপীয়ান ক্লাবে ব্রিটিশরা অশ্লীল অপসংস্কৃতির চর্চ্চা করত , ক্লাবের প্রবেশদ্বারে লিখা ছিল “ ভারতীয় ও কুকুরদের প্রবেশ নিষেধ”। এই অপমান থেকে জাতীকে মুক্ত করার জন্য, তাঁর প্রতিশোধ হিসেবে সেদিন ১৯৩২ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর রাত দশটায় জাতীয় বীর বিপ্লবী মহানায়ক মাস্টারদা সূর্যসেনের আর্দশে অনুপ্রাণিত হয়ে সাতজন বিপ্লবীকে সাথে নিয়ে ক্লাবটি আক্রমন করে প্রায় ২৮জন ব্রিটিশ নাগরিক ও পুলিশ নিহত করেন। বক্তারা ইউরোপীয়ান ক্লাব আক্রমনে প্রীতিলতাকে দরিদ্র মনসুর বাবুচির সহযোগীতা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। এই সংগ্রাম আমাদের জন্য গৌরবের ।
পরিশেষে বক্তারা বিপ্লবীদের স্মৃতি রক্ষার জন্য সরকারের কাছে আটটি দাবী জানান, ১) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিশ্রতি অনুযায়ী ১৯৩০ সালের ১৮ই এপ্রিল যুব বিদ্রোহ দিবসের স্থা্ন জালালাবাদ পাহাড়টিকে বিপ্লবীদের স্মৃতি হিসেবে সংরক্ষণ করা। ২) পাহাড়তলী ইউরোপীয়ান ক্লাবটি শুধু নামে জাদুঘর হিসেবে না রেখে বাস্তবে বিপ্লবীদের স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে রুপান্তরিত করতে হবে ৩) দামপাড়া পুলিশ লাইনে ‘পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’ এর নামকরণ ‘চট্টগ্রাম যুববিদ্রোহ ও পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’ করতে হবে। ৪) চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে ঐতিহাসিক নিদর্শন ফাসীর মঞ্চে বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদারের নাম ও ম্যুরাল সংযুক্ত করতে হবে। ৫) ১৯৩০ সালের ১৮ই এপ্রিল “ চট্টগ্রাম যুববিদ্রোহ দিবস”কে রাষ্ট্রিয়ভাবে পালন করতে হবে। ৬) ১৯৩৪ সালে ১২ই জানুয়ারী জাতীয়বীর বিপ্লবী মহানায়ক মাস্টারদা সূর্য সেনের ও বিপ্লবীনেতা তারকেশ্বর দস্তিদার এর ফাসী দিবস রাষ্ট্রিয়ভাবে পালন করতে হবে ৭) ১৯৩২ সালের ২৪শে সেপ্টেম্বর বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের আত্মাহতি দিবসকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করতে হবে । ৮) ঐতিহাসিক যাত্রামোহন সেন এর বাড়ির নামকরণ “স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’র এর পরিবর্তে ”যাত্রা-যতিন-নেলী সেনগুপ্ত জাদুঘর ” নামকরণ করতে হবে।
পথসভায় আরো উপস্থিত ছিলেন পরিষদের উপদেষ্ঠা শিক্ষক বিজয় শংকর চৌধুরী, অর্থসম্পাদক তপন ভট্টাচার্য্য, বিপ্লবী পরিবারের সদস্য প্রবীর দাশগুপ্ত নন্তু, সজল শিকদার।# – প্রেস বিজ্ঞপ্তি