আপডেটের সময়ঃ জানুয়ারি ১৪, ২০২৩
পটিয়া উপজেলার ১০ নম্বর ধলঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুর মুল্লুক আর নেই।
১৪ দল চট্টগ্রামের অন্যতম নেতা, গণতন্ত্রী পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, পটিয়া উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এবং গণতান্ত্রিক ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলনের অগ্রসৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুর মুল্লুক শনিবার সকাল ১১টায় পটিয়ায় মৃত্যুবরণ করেন।
মৃত্যুকালে তাজুর মুল্লুকের বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি দীর্ঘদিন দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি স্ত্রী, ৩ ছেলে, ১ মেয়ে ও নাতি নাতনি রেখে গেছেন।
আপাদমস্তক অসাম্প্রদায়িক চেতনার এই রাজনীতিবিদ বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে এরশাদ বিরোধী আন্দোলন, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলন এবং সবশেষ গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনেও তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। আমৃত্যু তিনি প্রগতিশীল রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
তাজুর মুল্লুকের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপি। শোক জানিয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা প্রদীপ দাশ, বিজন চক্রবর্তী, তিমির বরণ চৌধুরী, ধলঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রফিক আহমদসহ স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা। শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু হানিফ ও সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান। শোক প্রকাশ করেছেন ১৪ দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
শনিবার বিকেলে মুকৃটনাইট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুর মুল্লুককে রাষ্ট্রীয় সালাম দেয়া হয়। স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকায় ঢেকে দেয়া হয় তাঁর মরদেহ।
স্কুল মাঠে শোকসভায় শোক ও শ্রদ্ধা জানান সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ছালামত উল্ল্যাহ মল্ল, বর্তমান চেয়ারম্যান রবিন ঘোষ টুটুন, দক্ষিণ ভূর্ষির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সৈয়দ, আশিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাশেম, উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাহারুল ইসলাম চৌধুরী, পটিয়া পৌরসভার মেয়র আইয়ুব বাবুল, সাতকানিয়া পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ, ন্যাপের মোহাম্মদ আলমগীর, জাসদ নেতা জসিম উদ্দিন বাবুল, সিপিবি নেতা অধ্যাপক কানাই দাশ, পটিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিম রানা, কৃষক নেতা আবদুন নবী, ধলঘাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি শফিকুল ইসলাম বাবুল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড পটিয়ার কমান্ডার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন প্রমুখ।
শোক সভায় উপস্থিত রাজনীতিবিদ, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ বলেন, তাজুর মুল্লুক ছিলেন গণমানুষের নেতা। তিনি সারাজীবন সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করেছেন। অর্থবিত্তের কোনো মোহ তাজুর মুল্লুকের ছিল না। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখার পর স্বাধীন দেশ গঠনে তিনি রাজনীতি করেছেন আমৃত্যু। সব ধর্মের মানুষের কাছে তাজুর মুল্লুক ছিলেন সমান জনপ্রিয়। এই অঞ্চলের সকল সাংস্কৃতিক জাগরণেও তিনি ছিলেন অন্যতম প্রধান সংগঠক। মানুষের বিপদে আপদে সবসময় তিনি নিজে থেকে ছুটে গেছেন। একজন তাজুর মুল্লুকের প্রয়াণের মধ্যে দিয়ে অসাম্প্রদায়িক গণকল্যানমুখী এক রাজনৈতিক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটলো।
এরপর জানাজা শেষে তেকোটা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। ##