শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক, কবি মাহবুবর রহমানের স্মরণানুষ্ঠান


এখন চট্টগ্রাম ডেস্ক।

আপডেটের সময়ঃ মার্চ ৩১, ২০২২

উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সংগ্রামী সহসভাপতি মুক্তচিন্তা র লেখক, গবেষক, ও বরন্যে শিক্ষাবিদ মাহবুবর রহমানের স্মরণানুষ্ঠান ৩০ শে মার্চ বুধবার সন্ধ্যে ৬ টায় চেরাগী পাহাড়স্ত চট্টগ্রাম একাডেমী প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়।উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের উদ্যেগে আয়োজিত স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন উদীচী জেলা সংসদের সভাপতি জসীম চৌধুরী সবুজ,।উদীচী জেলা সংসদের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট অসীম বিকাশ দাশের সঞ্চালনায় স্মরণানুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উদীচী কেন্দ্রীয় কমিঠির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কবি ও সাংবাদিক রহমান মুফিজ,কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুমী দে,উদীচী জেলা সংসদের সহসভাপতি সুনীল ধর,আবুল কাশেম, পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মাহবুবর রহমানের ছোট ভাই মাহফুজুর রহমান মেরু,শ্যালক মাহবুব উল আলম চৌধুুরী,বড়ছেলে আউয়াল মাহবুব চৌধুরী,ছোট ছেলে সাফায়েৎ মাহাবুব চৌধুরী,উদীচী জেলা সংসদের সহ সাধারন সম্পাদক জয়তী ঘোষ এবং জয়শ্রী মজুমদার প্রমুখ।

স্মরণানুষ্ঠানের শুরুতে মাহবুবর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়,।মাহবুবর রহমানের জীবন বৃত্তান্ত পাঠ করেন উদীচীর জেলা সংসদের সহ সাধারন সম্পাদক শ্যামল ধর।মাহবুবর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংগীত পরিবেশন করেন উদীচী চট্টগ্রাম জেলার শিল্পীকর্মী ভাই বোনেরা ও নিবেদিতা দাশ। সভায় বক্তারা বলেন,জনাব মাহবুবুর রহমান চৌধুরী সাতকানিয়া থানার প্রত্যন্ত খাগরিয়া গ্রামের একজন সন্তান।শঙ্খ নদীর কোল ঘেঁষে থাকা খাগরিয়া গ্রামে ১৯৫০ সালের ৩০ জানুয়ারি উনার জন্ম। ছোটবেলা থেকেই শান্ত মানুষ টাকে গ্রামের মানুষের চিকিৎসা শিক্ষার অপ্রুতলতা এবং কৃষকের প্রতি নায্য অধিকার এসব নিয়ে ভাবাতো।

১৯৬৮ সালে মেট্রিকুলেশন পাশ করার পর চট্টগ্রাম শহরে চলে আসেন পড়ালেখার উদ্দেশ্যে এই সময় উনি জড়িয়ে পড়েন সাহিত্য অঙ্গনে,সাহিত্যিক আবুল ফজলের সান্নিধ্যে আসেন। সাহিত্যিক আবুল ফজলের সম্পাদনায় একটি পাক্ষিক পত্রিকায় জনাব মাহবুবর রহমান লেখালেখি করতেন এবং লেখনির প্রতি তার এই তীব্র ভালোবাসা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছিল। এক সময় তৎকালীন অবৈধ ভাবে অস্ত্রের মুখে ক্ষমতা নেয়া সরকারের বিরুদ্ধে লেখালেখির কারনে উনার লেখা একটি বইও ব্যানড করে দেয়া হয়। অন্যায়ের সাথে আপোষহীন মাহবুবুর রহমানের কলম তারপরেও থেমে থাকেনি। সরকারি কর্মচারী হয়েও অনড় ছিলেন গনতন্ত্রের পক্ষে। ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী গণ আন্দোলনে ছিলেন কলমের মাধ্যমে স্বক্রিয়। ১৯৯২ সালের জাহানারা ইমামের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি হলে মাহবুবুর রহমান ছুটে যান সেখানে।

গণবিচারে একাত্বতা প্রকাশ করে থাকেন আন্দোলনে। সাহিত্য জীবনে ১৯৮৯ এবং ১৯৯০ সালে পরপর দুইবার জেলা ভিত্তিক একুশের সাহিত্য পুরষ্কার লাভ করেন। বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাথে মাহবুবুর রহমানের সম্পর্ক সুদীর্ঘ ৩২ বছরের। সর্বশেষ নির্বাচিত উদীচী চট্টগ্রাম জেলা কমিটিতে তিনি সহ সভাপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছিলেন। গত ১১মার্চ ২০২২ ইংরেজী উনি আকস্মিকভাবে মৃত্যেবরণ করেন।উনার মৃত্যেুতে উদীচী পরিবার সহ চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে শোকের ছায়া নেমে আসে। উনি ছিলেন সদা হাস্যোজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত অমায়িক মানুষ।মা, মাটির প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা,সাহিত্যর প্রতি ঝোঁক, সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে বিচরন করা এই মুখচ্ছবি প্রতিনিয়ত খুঁজে ফিরবে উনার অসংখ্য সহযোদ্ধা, ছাত্র, এবং সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলের সংস্কৃতি কর্মীরা।