আপডেটের সময়ঃ অক্টোবর ২৬, ২০২২
‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ স্লোগান নিয়ে ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩২ তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে ছোটদের সাংস্কৃতিক জগত ‘শিশুমেলা’র আয়োজনে লালন স্মরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এই আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিল ফরিদপুর লালন পরিষদের শিল্পীদের গান।
অনুষ্ঠানে স্মরণ পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম বলেন, শিশুমেলা আগেও এ ধরণের আয়োজন করেছে। এবার লালন স্মরণ উৎসবের আয়োজন। লালন সারা পৃথিবীর বাঙালির সম্পদ। বহুমাত্রিক এক ব্যক্তিত্ব লালন। স্বাধীন ভূখন্ডের আশা বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্ন। এর নেপথ্যের ইতিহাস যেমন সৃষ্টি করেছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তেমনি লালনও সৃষ্টি করেছেন। তিনি তার কর্মে ও প্রতিভায় বিশেষ কোনো ধর্মের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন না। লালনের চেতনা অসাম্প্রদায়িক চেতনা। এই চেতনা না থাকলে বাংলাদেশ থাকে না। আজ আমাদের অনেক কিছু হয়েছে- উন্নতি, অগ্রগতি। কিন্তু সমাজ যদি অসাম্প্রদায়িক ও মানবতাবাদি সমাজ না হয়, তাহলে এসব অগ্রগতি টিকবে না। লালনের মানবতার বার্তা সারাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। তবেই বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, এ্ই উপমহাদেশের মানবতার মহান পুরুষ লালন। বাউল সঙ্গীতে আলো ও মাধুর্য আছে। লালন সাঁইজি মানবতার প্রতীক। অাধ্যাত্মিকতা, সাম্য ও মানবতায় লালন এক কীর্তিমান মানুষ। লালনের দর্শন এক বহুমুখী দর্শন। মানুষের হৃদয়কে দ্রুত নাড়া দিতে পারে লালন সঙ্গীত। নতুন প্রজন্মের মাঝে লালনের জীবনধারা তুলে ধরা খুব প্রয়োজন। তাই এ আয়োজনকে সাধুবাদ জানাই।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ বলেন, লালনের আধ্যাত্মিকতা মানুষকে এখনো আলোড়িত করে। পৃথিবী যতদিন থাকবে এসব গান মানুষকে মুগ্ধ করবে। লালন মানবিকতার জয়গান করেছেন।
জামালখান ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা বিজয় কিষাণ বলেন, লালন সঙ্গীত আবহমান বাংলার সংস্কৃতি। লালন মানবতার জয়গান গেয়েছেন। শুধু বাংলাদেশে নয় ভারতেও সমাদৃত। আমাদের নতুন প্রজন্মকে লালনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে এ আয়োজনকে সাধুবাদ জানাই।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিশুমেলা’র উদ্যোক্তা পরিচালক রুবেল দাশ প্রিন্স বলেন, নতুন প্রজন্মকে বাঙালির আবহমান সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে আমরা বিভিন্ন আয়োজন করে থাকি। এবার মানবতার সাধক লালন সাঁইয়ের তিরোধান দিবস উপলক্ষে এই আয়োজন করা হলো।
বক্তব্য পর্ব শেষে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্যে দিয়ে উৎসব উদ্বোধন করা হয়। সেন্ট স্কলাস্টিকা স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক মাগ্রেট মনিকা জিন্সের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুনীল সরকার, প্রকৌশলী রূপক চৌধুরী, শিল্পী মানস পাল, ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক প্রণব বল, খেলাঘর মহানগরী কমিটির সম্পাদকমন্ডলীল সদস্য মোরশেদুল আলম চৌধুরী, যুব নেতা শিবু প্রসাদ চৌধুরী প্রমুখ।
উৎসবে সঙ্গীত পরিবেশন করেন পাগলা বাবলু, জোহরা বাউল, হাবিবুর রহমান বাউল, চট্টগ্রামের লুপর্না মুৎসুদ্দী, প্রণয় ধর ও জয় দত্ত। ###