আপডেটের সময়ঃ এপ্রিল ২৫, ২০২২
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভায় চট্টগ্রাম নগরীতে আসন্ন বর্ষায় জলাবদ্ধতা নিরসন, উন্মুক্ত খাল-নালা নিরাপদ করা ও নগরীর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা যানজটমুক্ত করার দাবি জানানো হয়েছে। সোমবার নগরীর দোস্ত বিল্ডিংস্থ পার্টি কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু হানিফ।
জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহানের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা কমিটির সদস্য নাসির উদ্দিন মাহমুদ, মনসুর মাসুদ, দিদারুল আলম চৌধুরী, ইন্দ্র কুমার নাথ, অধ্যাপক শান্তপদ বড়–য়া মনু, শামসুল আলম, আবু সৈয়দ বলাই, আবদুর রশিদ, সুপায়ন বড়ুয়া, অধ্যাপক শিবু কান্তি দাশ।
সভায় জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্ষা আসন্ন। বন্দর নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বিভিন্ন সেবা সংস্থা। তবে এখন পর্যন্ত এসব প্রকল্পের যে অগ্রগতি তাতে এবারও বর্ষায় জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির কোনো আশা নেই। নগরবাসী আতঙ্কে আছে আগামী বর্ষা নিয়ে। প্রতি বছর বর্ষাকালে শহরের বেশিরভাগ এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এবার প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় নগরীর অনেক খালের ভিতর এখনো মাটি ও আবর্জনা জমে আছে। সিটি করপোরেশন থেকে বারবার এসব মাটি অপসারণের জন্য বলা হচ্ছে। সরকারি সংস্থাগুলো সমন্বয় সভা করছে। কিন্তু তেমন কোনো সমন্বয় দৃশ্যমান নয়। এ অবস্থায় আবারও জলাবদ্ধতায় ডুবতে পারে নগরী। তাই এখন থেকে প্রস্তুতি না নিলে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নতুন আতঙ্ক- উন্মুক্ত খাল-নালা। গত এক বছরে এরকম খোলা নালা-খালে পরে কমপক্ষে ৫জন মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। খালে পরে তলিয়ে যাওয়া একজন মানুষের সন্ধান আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এরকম ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের তালিকা করা হলেও সেগুলো ঝুঁকিমুক্ত করা হয়নি। বর্ষায় জলাবদ্ধতা হলে এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো হবে এক একটি মৃত্যুকূপ। অবিলম্বে এসব খাল-নালায় বেষ্টনি নির্মাণ এবং খোলা ম্যানহোল ও নালা মেরামত করতে হবে। তা না হলে প্রাণহানি ও পঙ্গুত্ব বরণের দায় সরকারি সংস্থাগুলোকে নিতে হবে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রামে এ ধরণের অব্যবস্থাপনা মেনে নেয়া যায় না। চলতি রমজান মাসে নগরীতে যানজট অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছেছে। এছাড়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ বিভিন্ন চলমান প্রকল্পের কাজ শীঘ্রই শেষ হবে না। তাই সড়ক অব্যবস্থাপনার এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য অবিলম্বে এলাকা ভিত্তিক যানবাহন চলাচল ব্যবস্থাপনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
বিশ্ব বাজারসহ নানা কারণে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি সাধারণের ক্রয়সীমা অতিক্রম করেছে। তেল, চাল, চিনিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম প্রতিদিন বাড়ছে। বিশ^ বাজার চাল ও তেলের দাম আরও বাড়ার অশনি সংকেত দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নি¤œ ও মধ্য আয়ের মানুষের খাদ্যপণ্যের চাহিদা পূরণের জন্য বছরব্যাপী রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবি জানায় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেন, বাণিজ্য নগরী হওয়ায় পেশার তাগিদে চট্টগ্রামে বহু জেলার মানুষ বসবাস করে। ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকি আছে। অবিলম্বে সকল শ্রমজীবীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবি জানায় জেলা কমিটি। পাশাপাশি শ্রমঘন জেলা হিসেবে চট্টগ্রামের শিল্পাঞ্চলগুলোতে অবিলম্বে রেশনিং ব্যবস্থা চালুও দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।